সঠিক পদ্ধতি অবলম্বন করে অনলাইনে মাত্র ১ সপ্তাহের মাঝেই ভোটার আইডি কার্ডের জন্ম তারিখ সংশোধন করা সম্ভব। ভোটার আইডি কার্ড জন্ম তারিখ সংশোধন করার নিয়ম বিস্তারিত জানতে পারবেন এই পোস্টে।
ভোটার আইডি কার্ডে থাকা জন্ম তারিখ এবং সার্টিফিকেটে থাকা জন্ম তারিখে অমিল থাকার কারণে অনেক সময় অনেকের চাকুরী না হওয়া সহ বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। পাসপোর্ট বা বা ভিসার আবেদন করার সময় বিভিন্ন ঝামেলা পোহাতে হয়।
এছাড়াও, অনেকেই জাতীয় পরিচয় পত্রের বয়স বাড়াতে বা কমাতে চান। এজন্য, ভোটার আইডি কার্ডে থাকা জন্ম তারিখ পরিবর্তন করতে হয়। তো চলুন, জাতীয় পরিচয় পত্রের জন্ম তারিখ সংশোধন করার সঠিক নিয়ম জেনে নেয়া যাক।
এই পোস্টের বিষয়বস্তু
ভোটার আইডি কার্ডের জন্ম তারিখ সংশোধন করতে কি কি লাগে
এনআইডি কার্ড বা ভোটার আইডি কার্ডের জন্ম তারিখ সংশোধন করতে কিছু প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট লেগে থাকে। ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে কি কি লাগে তার একটি তালিকা নিম্নরূপ —
- এসএসসি বা এইচএসসি অথবা সমমানের সার্টিফিকেট
- জন্ম নিবন্ধন সনদের অনলাইন কপি
- ড্রাইভিং লাইসেন্স অথবা পাসপোর্ট (যদি থাকে)
- বিয়ের কাবিননামা (যদি থাকে)
জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন করতে উপরোক্ত কাগজপত্রগুলো লেগে থাকে। তবে, আপনি যদি একজন সরকারি চাকুরীজীবী হন, তবে সার্ভিস বহি এবং কর্তৃপক্ষের প্রত্যয়ন পত্র লাগতে পারে। এছাড়া, আপনার যদি পাসপোর্ট থাকে, সেটি দিতে পারেন। পাসপোর্ট হয়েছে কিনা চেক করার মাধ্যমে আপনার পাসপোর্টের স্ট্যাটাস চেক করতে পারবেন।
এসব ডকুমেন্ট থাকলে নিচে উল্লেখ করে দেয়া পদ্ধতি অনুসরণ করে অনেক সহজেই আপনার ভোটার আইডি কার্ডের জন্ম তারিখ সংশোধন করার আবেদন করতে পারবেন।
অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন যাচাই করার মাধ্যমে আপনার জন্ম সনদের অনলাইন কপি সংগ্রহ করে নিতে পারবেন। অথবা, ইউনিয়ন পরিষদ/সিটি কর্পোরেশন থেকে অনলাইন কপি সংগ্রহ করে নিতে পারবেন।
ভোটার আইডি কার্ড জন্ম তারিখ সংশোধন করার নিয়ম
ভোটার আইডি কার্ড জন্ম তারিখ সংশোধন করতে services.nidw.gov.bd ওয়েবসাইট ভিজিট করুন এবং সকল তথ্য দিয়ে একাউন্ট রেজিস্টার করুন ও ফেস ভেরিফিকেশন করে একাউন্টে লগইন করুন। এরপর, এডিট প্রোফাইল অপশন থেকে জন্ম তারিখ পরিবর্তন করুন এবং প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট আপলোড করুন। অতঃপর, জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন ফি জমা দিয়ে আবেদন সম্পন্ন করুন।
জাতীয় পরিচয় পত্রের জন্ম তারিখ সংশোধন করার বিস্তারিত পদ্ধতি নিম্নে ধাপ আকারে বিস্তারিত উল্লেখ করে দেয়া হয়েছে। চলুন, জেনে নেয়া যাক।
জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট, জন্ম নিবন্ধন এবং ব্যাংকিং সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য সম্পর্কে আপডেট জানতে আমাদের সোশ্যাল মিডিয়াগুলো ফলো করুন।
ধাপ ১ – এনআইডি একাউন্টে রেজিস্ট্রেশন বা লগইন করুন
services.nidw.gov.bd ওয়েবসাইট ভিজট করুন এবং রেজিস্টার করুন বাটনে ক্লিক করে এনআইডি নাম্বার/স্লিপ নাম্বার, জন্ম তারিখ ও ক্যাপচা পূরণ করে সাবমিট করুন। এরপর, ঠিকানা, মোবাইল নাম্বার এবং ফেস ভেরিফিকেশন সম্পন্ন করে একাউন্টে ইউজারনেম এবং পাসওয়ার্ড সেট করে নিন। এরপর, পাসওয়ার্ড এবং ইউজারনেম দিয়ে একাউন্টে লগইন করুন।
ধাপ ২ – জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন ফি জমা দিন
এই লিংকে https://services.nidw.gov.bd/nid-pub/fees ভিজিট করে জাতীয় পরিচয়পত্র ফি কত টাকা তা হিসাব করতে পারবেন। এরপর, বিকাশ/নগদ বা যেকোনো মোবাইল ব্যাংকিং মাধ্যম ব্যবহার করে জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন ফি জমা দিন। বিকাশ দিয়ে ফি জমা দিতে নিচে উল্লেখ করে দেয়া বিকাশ দিয়ে জাতীয় পরিচয় সংশোধন ফি জমা দেয়ার পদ্ধতি অনুসরণ করুন।
বিকাশ দিয়ে জাতীয় পরিচয় সংশোধন ফি জমা দেয়ার পদ্ধতি
বিকাশ দিয়ে ভোটার আইডি কার্ড জন্ম তারিখ সংশোধন ফি জমা দেয়ার জন্য নিচে উল্লিখিত ধাপগুলো অনুসরণ করুন —

- প্রথমেই বিকাশ ওপেন করে পে বিল অপশনে ক্লিক করুন
- এবার, NID Service অপশনে ক্লিক করুন
- এখন, আবেদনের ধরণ নির্বাচন করুন এবং নিচে আপনার এনআইডি কার্ডের নাম্বার লিখুন
- অতঃপর, বিকাশ দিয়ে সংশোধন ফি জমা দিন
সংশোধন ফি জমা দেয়ার পর আবারও নিম্নোক্ত ধাপগুলো অনুসরণ করুন সংশোধন আবেদন সম্পন্ন করার জন্য।
ধাপ ৩ – জন্ম তারিখ সংশোধন করার নিয়ম
প্রোফাইল অপশনে ক্লিক করে উপরে ডান দিকে থাক এডিট বাটনে ক্লিক করুন।

এরপর, জন্ম তারিখ লেখার পাশে থাকা ঘরে টিক মার্ক দিবেন এবং আপনার বর্তমান জন্ম তারিখ পরিবর্তন করে নতুন জন্ম তারিখ লিখবেন। অতঃপর, পরবর্তী বাটনে ক্লিক করবেন।

পরিবর্তন বাটনে ক্লিক করার পর আপনার বর্তমান জন্ম তারিখ এবং আপডেট জন্ম তারিখ দেখতে পারবেন। নিশ্চিত হওয়ার পর আবারও পরবর্তী বাটনে ক্লিক করুন।

ধাপ ৪ – এনআইডি ফি পরিশোধ করুন
এই ধাপে আপনার ডিপোজিট করা ফি এর পরিমাণ দেখতে পারবেন যেটি বিকাশ/নগদ বা মোবাইল ব্যাংকিং মাধ্যম ব্যবহার করে বিল দিয়েছিলেন। অতঃপর, বিতরণের ধরণ থেকে কোন ধরণের কার্ড তা সিলেক্ট করে দিন। এরপর, পরবর্তী বাটনে ক্লিক করুন।

এখন, প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের স্ক্যান কপি আপলোড করুন এবং নিশ্চিত করুন। এভাবে করে অনেক সহজেই ভোটার আইডি কার্ড জন্ম তারিখ সংশোধন করতে পারবেন।
ভোটার আইডি কার্ড বয়স সংশোধন করতে কত দিন লাগে
ভোটার আইডি কার্ডের বয়স সংশোধন করতে ৭ দিন থেকে শুরু করে ৪৫ দিন পর্যন্ত লেগে থাকে। ৩ বছর বয়স সংশোধন করতে ৭ দিন, ৫ বছর সংশোধন করতে ১৫ দিন এবং ৫ বছরের বেশি সংশোধন করতে ৩০ দিন থেকে ৪৫ দিন পর্যন্ত লেগে থাকে। আপনার ভোটার আইডি কার্ডের জন্ম তারিখ অনুযায়ী কত বছর সংশোধন করার আবেদন করছেন তার উপর ভিত্তি করে সময় লাগবে।
FAQ
ভোটার আইডি কার্ড বয়স সংশোধন করতে কি কি লাগে?
ভোটার আইডি কার্ডের বয়স সংশোধন করতে পাবলিক পরীক্ষার সার্টিফিকেট, পাসপোর্ট বা ড্রাইভিং লাইসেন্স যদি থাকে, এছাড়া আপনার জন্ম তারিখ প্রমাণ করবে এমন প্রমাণপত্র লাগবে।
ভোটার আইডি কার্ডের বয়স সংশোধন করতে কত দিন লাগে?
ভোটার আইডি কার্ডের বয়স সংশোধন করতে ৭ দিন থেকে শুরু করে ৪৫ দিন পর্যন্ত সময় লেগে থাকে।
স্মার্ট কার্ড কি সংশোধন করা যায়?
হ্যাঁ, আপনি চাইলে স্মার্ট আইডি কার্ডে থাকা তথ্য সংশোধন করার জন্য আবেদন করতে পারবেন। এজন্য, ধাপ ০৪ এ স্মার্ট কার্ড নির্বাচন করতে হবে।
ভোটার আইডি কার্ড বয়স সংশোধন করতে কত টাকা লাগে
ভোটার আইডি কার্ড বয়স সংশোধন করার জন্য ২৩০ টাকা ফি লেগে থাকে যা বিকাশ বা অন্য মাধ্যম দিয়ে পেমেন্ট করতে হয়।
ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে কত টাকা লাগে
ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে ২৩০ টাকা লাগে। ভোটার আইডি কার্ড এবং অন্যান্য তথ্য সংশোধন করতে ৩৪৫ টাকা লেগে থাকে।
সারকথা
ভোটার আইডি কার্ড জন্ম তারিখ সংশোধন করার নিয়ম অনুসরণ করে আবেদন করার সময় আপলোড করা ডকুমেন্টগুলোর একটি করে কপি সঙ্গে রাখতে হবে। এতে করে, নির্বাচন কমিশন অফিস থেকে ডাকা হলে এগুলো নিয়ে যেতে হবে। সকল ডকুমেন্ট সঠিকভাবে আপলোড করলে ডকুমেন্ট নিয়ে ডাকে না।
এছাড়া, উপরোক্ত নিয়ম অনুসরণ করে আপনি নিজেই জন্ম তারিখ সংশোধন করার জন্য আবেদন করতে পারবেন। এজন্য, কোনো কম্পিউটারের দোকান যাওয়ার প্রয়োজন নেই। সংশোধন হয়ে গেলে আবারও অনলাইন থেকে ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করতে পারবেন।
আরও পড়ুন — জন্ম নিবন্ধন যাচাই
আমার
বিস্তারিত লিখে কমেন্ট করুন।
মাশাল্লাহ। আপনার ওয়েবসাইট থেকে লেখাগুলো পড়ে আমি অনেক উপকৃত হয়েছি, সুন্দরভাবে এবং গুছিয়ে বুঝিয়ে আমাদেরকে সঠিক তথ্য দেওয়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই আপনাকে।
সুন্দর মতামতের জন্য আপনাকেও ধন্যবাদ জানাই।