ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে ১১৫ টাকা থেকে শুরু করে ৩৪৫ টাকা লেগে থাকে। কোন ধরনের সংশোধন করতে কত টাকা লাগে তা নিয়ে বিস্তারিত তথ্য এই পোস্টে উল্লেখ করে দেয়া হয়েছে।

ভোটার আইডি কার্ডের তথ্য ভুল থাকলে তা সংশোধন করার প্রয়োজন পড়ে। বিভিন্ন কারণে আমাদের ভোটার আইডি কার্ডে থাকা তথ্য ভুল হতে পারে। এছাড়া, ভুলের ধরনের ক্ষেত্রেও পার্থক্য হয়ে থাকে। ভোটার আইডি কার্ডের ভুল সংশোধন করার জন্য অনলাইনে আবেদন করা যায়।

অনেকেই ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন আবেদন করতে চান। কিন্তু, ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে কি কি লাগে, ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে কত দিন লাগে এবং ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে কত টাকা লাগে তা জানেন না। তো চলুন, এনআইডি কার্ড সংশোধন করতে কত টাকা লাগে জেনে নেয়া যাক।

ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে কত টাকা লাগে

ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে ১১৫ টাকা থেকে শুরু করে ৩৪৫ টাকা পর্যন্ত লেগে থাকে। অন্যান্য তথ্য সংশোধন করতে ১১৫ টাকা, জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন করতে ২৩০ টাকা এবং জাতীয় পরিচয়পত্র ও অন্যান্য তথ্য একইসাথে সংশোধন করতে ৩৪৫ টাকা লেগে থাকে।

এছাড়াও, জাতীয় পরিচয়পত্র রি-ইস্যু করতে ২৩০ টাকা লেগে থাকে। কিন্তু, জরুরি রি-ইস্যু করতে আইলে ৩৪৫ টাকা লেগে থাকে। আপনার জাতীয় পরিচয়পত্রে ভুল থাকলে তা সংশোধন করার জন্য অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন। এরপর, সংশোধন আবেদন অনুমোদন হলে নতুন ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করে ব্যবহার করতে পারবেন।

জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন ফি

জাতীয় পরিচয় পত্রের তথ্য সংশোধন করতে ২৩০ টাকা ফি লেগে থাকে। অনলাইন থেকে ভোটার আইডি কার্ড জন্ম তারিখ সংশোধন করা, নাম কিংবা বয়স সংশোধন করার জন্য অনলাইনেই ফি জমা দিতে হয় ২৩০ টাকা। সাধারণ ভোটার আইডি কার্ডের ক্ষেত্রে ২৩০ টাকা এবং সাধারণ স্মার্ট কার্ডের ক্ষেত্রেও ২৩০ টাকা ফি প্রযোজ্য হবে।

অর্থাৎ, জাতীয় পরিচয় পত্রের তথ্য সংশোধন করার প্রয়োজন হলে অনলাইনে আবেদন করার সাথে সাথে ২৩০ টাকা ফি প্রদান করতে হবে। সাধারণ বিতরণের ধরণ এবং সাধারণ স্মার্ট কার্ডের ক্ষেত্রে একই ফি প্রযোজ্য হবে। জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন করার ক্ষেত্রে যেসব তথ্য সংশোধন করতে পারবেন তার একটি তালিকা নিচে দেয়া হল —

  • নিজের নাম বা নামের ইংরেজি বানান
  • পিতা-মাতার নাম বা নামের ইংরেজি বানান
  • ঠিকানা সংশোধন
  • ভোটার আইডি কার্ডের ছবি সংশোধন
  • স্বাক্ষর সংশোধন

উপরোক্ত তথ্যগুলো ভুল থাকলে সেগুলো সংশোধন করার জন্য আবেদন করতে পারেন। আবেদন করার মাধ্যমে এগুলো সংশোধন করে নিতে পারবেন। এজন্য, আবেদন ফি ২৩০ টাকা জমা দিতে হবে।

ভোটার আইডি কার্ডের অন্যান্য তথ্য সংশোধন ফি

ভোটার আইডি কার্ডের অন্যান্য তথ্য সংশোধন করতে ১১৫ টাকা ফি লাগে। আপনার জাতীয় পরিচয় পত্রে থাকা অন্যান্য তথ্য যেমন শিক্ষাগত যোগ্যতা, বিয়ে হয়েছে কিনা এবং স্বামী/স্ত্রীর নাম সহ অন্যান্য তথ্য সংশোধন করতে চাইলে অনলাইনে আবেদন করার মাধ্যমে ১১৫ টাকা ফি জমা দিতে হবে। তাহলে, ভোটার আইডি কার্ডে থাকা অন্যান্য তথ্য সংশোধনের আবেদনতি অনুমোদিত হবে।

সাধারণ আইডি কার্ড এবং সাধারণ স্মার্ট আইডি কার্ড দুইটি ক্ষেত্রেই একই ফি প্রযোজ্য হবে। অন্যান্য তথ্য সংশোধন করার প্রয়োজন হলে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইট ভিজিট করার মাধ্যমে অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন। অন্যান্য তথ্য সংশোধন করার সময় যেসব তথ্য সংশোধন করতে পারবেন তার একটি তালিকা নিচে উল্লেখ করে দেয়া হল —

  • শিক্ষাগত যোগ্যতা
  • স্বামী/স্ত্রীর নাম
  • ব্যক্তির ধর্ম
  • মোবাইল নাম্বার
  • কাজের ক্ষেত্র
  • পাসপোর্ট
  • ড্রাইভিং লাইসেন্স এর তথ্য

আপনার যদি উপরোক্ত তথ্য সংশোধন করার প্রয়োজন হয়, তাহলে ভোটার আইডি কার্ডের অন্যান্য তথ্য সংশোধন করার জন্য আবেদন করুন। এজন্য, ১১৫ টাকা ফি প্রদান করতে হবে।

জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট, জন্ম নিবন্ধন এবং ব্যাংকিং সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য সম্পর্কে আপডেট জানতে আমাদের সোশ্যাল মিডিয়াগুলো ফলো করুন।

জাতীয় পরিচয়পত্র ও অন্যান্য তথ্য সংশোধন

জাতীয় পরিচয়পত্র ও অন্যান্য তথ্য সংশোধন ফি ৩৪৫ টাকা। শুধুমাত্র অন্যান্য তথ্য সংশোধন ফি ১১৫ টাকা এবং জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন করার ফি ২৩০ টাকা। দুইটি একসাথে আবেদন করতে মোট ৩৪৫ টাকা ফি দিতে হবে।

এখানে, অন্যান্য তথ্য সংশোধন ফি হচ্ছে ১০০ টাকা এবং ১৫% ভ্যাট যুক্ত হয়ে এটি হয়েছে ১১৫ টাকা। একইভাবে, জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন করার ফি হচ্ছে ২০০ টাকা এবং ১৫% ভ্যাট যুক্ত হয়ে ২৩০ টাকা হয়েছে। আবার, জাতীয় পরিচয়পত্র ও অন্যান্য তথ্য সংশোধন ফি একত্রে ৩০০ টাকা কিন্তু ভ্যাট ১৫% সহ মোট ৩৪৫ টাকা।

তাই, আপনি যদি জাতীয় পরিচয়পত্র এবং অন্যান্য তথ্য একইসাথে সংশোধন করতে চান, তাহলে ৩৪৫ টাকা ফি জমা দেয়ার মাধ্যমে অনলাইনে জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন আবেদন করতে পারেন।

জাতীয় পরিচয়পত্র রি-ইস্যু ফি

জাতীয় পরিচয়পত্র সাধারণ এবং সাধারণ স্মার্ট আইডি কার্ডের রি-ইস্যু ফি হচ্ছে ২৩০ টাকা। কিন্তু, জরুরি ভিত্তিতে জাতীয় পরিচয়পত্র রি-ইস্যু করতে হলে মোট ৩৪৫ টাকা ফি জমা দিতে হবে। একইভাবে, সাধারণ স্মার্ট আইডি কার্ড রি-ইস্যু করতে ৩৪৫ টাকা ফি জমা দিতে হবে।

জাতীয় পরিচয়পত্র রি-ইস্যু করার মাধ্যমে আপনার ভোটার আইডি কার্ডে থাকা ভুল সংশোধিত করার পর সংশোধিত ভোটার আইডি কার্ড সংগ্রহ করতে পারবেন। জাতীয় পরিচয়পত্র রি-ইস্যু করার জন্য বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইট ভিজিট করতে পারেন। সেখানেই অনলাইনে রি-ইস্যুর আবেদন করতে পারবেন।

ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন ফি তালিকা

ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন ফি কত টাকা তার একটি তালিকা নিচে উল্লেখ করে দেয় হয়েছে। এই তালিকায় ভোটার আইডি কার্ড, অন্যান্য তথ্য, রি-ইস্যু সহ সব ধরনের ফি সম্পর্কে জানতে পারেবন।

সংশোধনের ধরণফি এর পরিমাণ (৳)ভ্যাট এর পরিমাণ (৳)মোট ফি এর পরিমাণ (৳)
জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন২০০ টাকা৩০ টাকা২৩০ টাকা
অন্যান্য তথ্য সংশোধন১০০ টাকা১৫ টাকা১১৫ টাকা
জাতীয় পরিচয়পত্র ও অন্যান্য সংশোধন৩০০ টাকা৪৫ টাকা৩৪৫ টাকা
জাতীয় পরিচয়পত্র রি-ইস্যু২০০ টাকা৩০ টাকা২৩০ টাকা
জাতীয় পরিচয়পত্র রি-ইস্যু (জরুরি)৩০০ টাকা৪৫ টাকা৩৪৫ টাকা

এখানে সাধারণ এবং সাধারণ স্মার্ট কার্ড দুই ধরনের ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করার ফি কত টাকা তা উল্লেখ করে দেয়া হয়েছে। আপনি কোন ধরনের ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন আবেদন করবেন, তার উপর ভিত্তি করে ফি এর পরিমাণ নির্ধারণ হবে।

বিকাশ দিয়ে ভোটার আইডি কার্ডের সংশোধন ফি জমা দিন

বিকাশ দিয়ে ভোটার আইডি কার্ডের তথ্য সংশোধন ফি জমা দিতে পারবেন ঘরে বসেই। এজন্য নিচে উল্লেখ করে দেয়া ধাপগুলো অনুসরণ করুন —

বিকাশ দিয়ে জাতীয় পরিচয় সংশোধন ফি জমা দেয়ার পদ্ধতি
বিকাশ দিয়ে জাতীয় পরিচয় সংশোধন ফি জমা দেয়ার পদ্ধতি
  • প্রথমেই বিকাশ অ্যাপ ওপেন করুন এবং পে বিল অপশনে ক্লিক করুন
  • এখন, NID Service অপশনটি খুঁজে বের করে সেখানে ক্লিক করুন
  • এবার, আবেদনের ধরণ নির্বাচন করুন এবং নিচে এনআইডি নম্বর লিখুন
  • অতঃপর, এনআইডি কার্ড সংশোধন ফি জমা দিন বিকাশ অ্যাকাউন্ট দিয়ে

এই পদ্ধতি অনুসরণ করার মাধ্যমে ঝামেলা ছাড়াই ভোটার আইডি কার্ডের সংশোধন ফি জমা দিতে পারবেন। আবেদনের ধরণ নির্বাচন করলে সংশোধন ফি কত টাকা তা দেখতে পারবেন বিকাশ অ্যাপ থেকেই। এছাড়াও, অন্যভাবে সংশোধন ফি হিসেব করতে নিচের অংশ পড়ুন।

ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন ফি হিসেব করুন

ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন ফি কত টাকা তা জানার জন্য আমরা বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন এর ওয়েবসাইট ব্যবহার করতে পারি। এজন্য, নিচে উল্লেখ করে দেয়া ধাপগুলো অনুসরণ করুন।

ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন ফি
ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন ফি
  • প্রথমেই ভিজিট করুন https://services.nidw.gov.bd/nid-pub/fees লিংকে
  • এরপর, আপনার ভোটার আইডি কার্ডের নাম্বার লিখুন
  • আবেদনের ধরণ ও বিতরণের ধরণ নির্বাচন করুন
  • অতঃপর, ক্যাপচা কোড পূরণ করুন। তাহলে, ফি কত টাকা জানতে পারবেন।

সারকথা

এই ব্লগে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে কত টাকা লাগে তা নিয়ে বিস্তারিত তথ্য শেয়ার করেছি। পোস্টটি শুরু থেকে শেষ অব্দি পড়লে জাতীয় পরিচয়পত্রের যেকোনো তথ্য ভুল থাকলেও তা সংশোধন করতে কত টাকা লাগবে তা জানতে পারবেন।

জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন আবেদন করার পর সেটি ডাউনলোড করলে নতুন তথ্য যুক্ত হবেনা। আপনাকে নতুন করে আইডি কার্ড রি-ইস্যু করতে হবে। রি-ইস্যু ফি কত টাকা তা উল্লেখ করে দেয়া হয়েছে। রি-ইস্যু করার পর ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করলে নতুন তথ্য যুক্ত থাকবে।

অন্যান্য পোস্টগুলো

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *