দ্বৈত ভোটার আইডি কার্ড হওয়ার কারণে ভোটার আইডি কার্ড বাতিল করতে চাচ্ছেন কিন্তু কিভাবে ভোটার আইডি কার্ড বাতিল করতে হয় তা জানেন না? জাতীয় পরিচয় পত্র বাতিল করার নিয়ম জানতে পারবেন এই পোস্টে।

অনেকেই নাম এবং বয়স পরিবর্তন করে একের অধিকবার ভোটার নিবন্ধন করে থাকেন। একারণে, একজন ব্যক্তির একের অধিক ভোটার আইডি কার্ড হয়ে যায়। একে দ্বৈত ভোটার বলা হয়ে থাকে। দ্বৈত ভোটার হলে একবার ধরা পড়লে ১০ হাজার টাকা জরিমানা সহ ৬ মাসের কারাদণ্ড হতে পারে।

দ্বৈত ভোটার আইডি কার্ড বাতিল করার নিয়ম জানতে হলে পোস্টটি শুরু থেকে শেষ অব্দি পড়তে হবে। তো চলুন, বিস্তারিত জেনে নেয়া যাক।

কখন ভোটার আইডি কার্ড বাতিল করতে হবে

অনেকের ভোটার আইডি কার্ড দুইটি বা এর অধিক হয়ে থাকে বিভিন্ন কারণে। নিম্নোক্ত কারণগুলোতে আপনার যদি দ্বৈত ভোটার আইডি কার্ড হয়ে থাকে, তবে সেটি বাতিল করতে হবে। এছাড়াও, যেকোনো কারণেই দ্বৈত ভোটার আইডি কার্ড হলে আসলটি রেখে অন্যটি বাতিল করতে হবে।

দ্বৈত ভোটার আইডি কার্ড হয়েছে কিনা জানার জন্য ভোটার আইডি কার্ড চেক করতে পারেন। এতে করে, আপনার আসল ভোটার আইডি কার্ড কোনটি সেটি সম্পর্কে জানতে পারবেন। এছাড়াও, চাইলে অনলাইন থেকে ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করতে পারবেন।

দ্বৈত ভোটার আইডি কার্ড হলে

নাম, ঠিকানা এবং জন্ম তারিখ সহ নিজের তথ্য গোপন করে যখন একজন ব্যক্তি একের অধিকবার ভোটার নিবন্ধন করেন এবং ভোটার হয়ে থাকেন, তখন সেটিকে দ্বৈত ভোটার বলা হয়। আপনার যদি একের অধিক ভোটার আইডি কার্ড থাকে তাহলে ১০ হাজার টাকা জরিমানা সহ ৬ মাসের কারাদণ্ড হতে পারে।

তাই, আপনি দ্বৈত ভোটার হয়ে থাকলে ভোটার আইডি কার্ড বাতিল করার জন্য আবেদন করতে হবে। এনআইডি কার্ড বাতিল করার নিয়ম নিম্নে উল্লেখ করে দেয়া হয়েছে।

অল্প বয়সে ভোটার হলে

অনেকেই বয়স বৃদ্ধি করে অন্যায়ভাবে ভোটার নিবন্ধন করে থাকেন। কিন্তু, একবার যদি ধরা পড়েন তাহলে জরিমানা হওয়া সহ কারাদণ্ড বা উভয়ই হতে পারে। বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন থেকে দেয়া নির্দিষ্ট বয়সসীমার পূর্বে কেউ ভোটার নিবন্ধন করে ভোটার হয়ে থাকলে তার ভোটার আইডি কার্ড বাতিল করতে হবে।

আপনি যদি বয়স পূর্ণ হওয়ার পূর্বেই ভোটার হয়ে থাকেন তাহলে ভোটার আইডি কার্ড বাতিল করতে হবে। তো চলুন, ভোটার আইডি কার্ড বাতিল করার পদ্ধতি জেনে নেয়া যাক।

জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট, জন্ম নিবন্ধন এবং ব্যাংকিং সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য সম্পর্কে আপডেট জানতে আমাদের সোশ্যাল মিডিয়াগুলো ফলো করুন।

ভোটার আইডি কার্ড বাতিল করতে কি কি লাগে

ভোটার আইডি কার্ড বাতিল করতে হলে কিছু প্রয়োজনীয় কাগজপত্র লেগে থাকে। দ্বৈত ভোটার আইডি বাতিল করতে যেসব কাগজপত্র লেগে থাকে তার একটি তালিকা নিচে উল্লেখ করে দেয়া হয়েছে —

  • আসল ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি
  • জন্ম নিবন্ধন সনদের ফটোকপি
  • নকল ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি
  • ড্রাইভিং লাইসেন্স অথবা পাসপোর্ট এর ফটোকপি
  • ভোটার আইডি কার্ড বাতিল করার আবেদনপত্র
  • ভোটার আইডি কার্ড বাতিলের ফি

ভোটার আইডি কার্ড বাতিল করতে চাইলে উপরোক্ত ডকুমেন্টগুলো ভোটার আইডি বাতিলের আবেদনের সঙ্গে যুক্ত করতে হবে। আইডি কার্ড বাতিল করার পদ্ধতি নিচে উল্লেখ করে দেয়া হয়েছে।

ভোটার আইডি কার্ড বাতিল করার নিয়ম

ভোটার আইডি কার্ড বাতিল করার জন্য উপরে উল্লিখিত প্রয়োজনীয় কাগজপত্রগুলো সহ একটি আইডি কার্ড বাতিলের আবেদনপত্র লিখতে হবে। আপনার আসল এনআইডি নাম্বার এবং নকল এনআইডি নাম্বার সহ নিজের পরিচয় প্রমাণের কাগজপত্র আবেদনপত্রের সাথে যুক্ত করতে হবে। অতঃপর, জেলা নির্বাচন কমিশন অফিস বরাবর আবেদনপত্রটি পাঠিয়ে দিন। এভাবে করে দ্বৈত ভোটার আইডি বাতিল করতে পারবেন।

দ্বৈত ভোটার আইডি কার্ড বাতিল করার বিস্তারিত পদ্ধতি

দ্বৈত ভোটার আইডি কার্ড বাতিল করতে নিম্নে উল্লিখিত ধাপগুলো অনুসরণ করুন —

ধাপ ১ — ভোটার আইডি বাতিলের আবেদনপত্র লিখুন

ভোটার আইডি কার্ড বাতিল করতে চাইলে একটি কম্পিউটার কম্পোজ আইডি কার্ড বাতিলের আবেদনপত্র লিখতে হবে। আবেদনপত্রে আপনার আসল এনআইডি কার্ডের নাম্বার, দ্বৈত বা নকল এনআইডি কার্ডের নাম্বার লিখতে হবে। এছাড়াও, প্রয়োজনীয় কী কী কাগজপত্র আবেদনপত্রের সাথে জমা দিচ্ছেন সেটিও উল্লেখ করতে হবে।

ধাপ ২ — প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংযুক্ত করুন

আবেদনপত্র লেখা শেষে এটি প্রিন্ট করে নিন। অতঃপর, আবেদনপত্রের সাথে প্রয়োজনীয় যেসব কাগজপত্র চাওয়া হয়েছে সেগুলো সংযুক্ত করুন। আপনার আসল এনআইডি কার্ডের ফটোকপি, নকল এনআইডি কার্ডের ফটোকপি, জন্ম নিবন্ধন সনদের ফটোকপি সহ অন্যান্য কাগজপত্র যুক্ত করুন।

ধাপ ৩ — ভোটার আইডি বাতিলের ফি জমা দিন

আবেদনপত্র লেখা হলে এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংযুক্ত করা হলে ভোটার আইডি কার্ড বাতিলের ফি জমা দিন। এনআইডি বাতিলের আবেদন ফি সোনালি ব্যাংকের মাধ্যমে জমা দিয়ে সেটির প্রমাণও আবেদনপত্রের সাথে যুক্ত করুন।

এরপর, আবেদনপত্রটি আপনার জেলা নির্বাচন কমিশন অফিস বরাবর পাঠিয়ে দিন। তারা আপনার দেয়া তথ্য যাচাই-বাছাই করে নকল ভোটার আইডি কার্ড বাতিল করে আপনার আসল ভোটার আইডি কার্ডটি চালু রাখবে। এতে করে, দ্বৈত ভোটার হওয়ার সমস্যা থেকে বেঁচে যাবেন।

ভোটার আইডি কার্ড বাতিল করতে কত দিন লাগে?

দ্বৈত ভোটার আইডি কার্ড বাতিলের আবেদন করার ১ থেকে ২ মাসের মাঝে নকল ভোটার আইডি কার্ড বাতিল করে দেয়া হয়ে থাকে। তবে, নির্বাচন কমিশন অফিসের কাজের চাপের উপর এই সময় নির্ভর করবে। যদি কাজের চাপ কম থাকে তাহলে দ্রুত সময়ে আপনার দ্বৈত ভোটার আইডিটি বাতিল করে দেয়া হবে।

দ্বৈত ভোটার হওয়ার অসুবিধা কী?

দ্বৈত ভোটার হলে একবার ধরা পড়লে ১০ হাজার টাকা জরিমানা বা ৬ মাসের কারাদণ্ড হতে পারে। এছাড়া, কিছু ক্ষেত্রে ১০ হাজার টাকা জরিমানা সহ ৬ মাসের কারাদণ্ড হতে পারে। তাই, দ্বৈত ভোটার হয়ে থাকলে নকল এনআইডি কার্ড বাতিল করার জন্য আবেদন করতে পারেন।

FAQ

দ্বৈত ভোটার নিবন্ধন বাতিল করতে কতদিন সময় লাগে?

দ্বৈত ভোটার নিবন্ধন বাতিল করতে ১ মাস থেকে ২ মাস পর্যন্ত সময় লেগে থাকে। নির্বাচন কমিশন অফিসের ব্যস্ততার উপর এই সময় নির্ভর করবে।

দ্বৈত ভোটার নিবন্ধন করলে কি শাস্তি হতে পারে?

দ্বৈত ভোটার নিবন্ধন করলে ১০ হাজার টাকা জরিমানা বা ৬ মাসের কারাদন্ড কিংবা উভয় শাস্তি হতে পারে।

সারকথা

এই পোস্টে দ্বৈত ভোটার আইডি কার্ড বাতিল করার নিয়ম নিয়ে বিস্তারিত তথ্য শেয়ার করেছি। কেউ যদি ভুলক্রমে দ্বৈত ভোটার হয়ে থাকে তাহলে আসল এনআইডি কার্ড রেখে নকল এনআইডি কার্ড কীভাবে বাতিল করতে হয় তা এই পোস্ট থেকে জানতে পারবেন। কেউ ভোটার আইডি বাতিল করতে চাইলে তাদের সাথে এই পোস্টটি শেয়ার করুন।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *